পোস্টগুলি

মানুষের পেটে অ্যাসিডিটি বা অম্বল কেন হয়?

মানুষের পেটে অ্যাসিডিটি বা অম্বল কেন হয়? মানুষ তথা প্রতিটি প্রাণীকে খাদ্য খেতেই হয়, অন্যথায় জীবনের অস্তিত্ব টিকে থাকতে পারে না। কারণ শরীরকে শক্তি প্রদান করে খাদ্য। কিন্তু এই খাদ্য যদি হজম না হয় তাহলে চরম বিপত্তি ঘটবে। তাইতো শরীরের অভ্যন্তরে রচিত হয়েছে অনন্য পৌষ্টিকতন্ত্র বা হজমের প্রকৌশল। চর্ব্য চোষ্য লেহ্য পেয় যেভাবে গ্রহীত করা হোক না কেন, খাদ্য প্রথমে পৌঁছে যায় পেটে বা পাকস্থলীর মধ্যে। এখান থেকেই খাদ্য হজমের মূল প্রক্রিয়া শুরু হয়। যেমন- * পাকস্থলী থেকে নিঃসৃত হয় গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিড (HCI), যা কিনা খাবার হজমের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এই অ্যাসিড খাবারের মধ্যে থাকা প্রোটিনকে ভেঙে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে পরিণত করে। এভাবে খাদ্যকে ভেঙে ফেলার মানে হল হজমের প্রাথমিক ও প্রধান শর্ত। আবার এই অ্যাসিড খাদ্য হজমে সাহায্যকারী এনজাইমকে অধিক কার্যকরী করে তোলে, যেমন নিষ্ক্রিয় পেপসিনোজেনকে সক্রিয় পেপসিনে রূপান্তর করে দেয়। তারপর সক্রিয় এনজাইম খাদ্য হজমে সাহায্য করে অর্থাৎ খাদ্যের প্রোটিন ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট জাতীয় পুষ্টি উপাদান সমূহকে ভেঙে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণায় রূপান্তর করে। তখন ক্ষুদ্র খাদ্...

ডায়রিয়া নিরাময়ের উপকারী জিরা ও বেলপাতা:

ডায়রিয়া নিরাময়ের উপকারী জিরা ও বেলপাতা: ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা কোনো রোগ নয়, বরং শরীরকে সুস্থ রাখার প্রতিরক্ষামূলক প্রক্রিয়া। কারণ শরীর থেকে জীবাণু, টক্সিন বা দূষিত পদার্থ বাইরে বহিষ্কৃত হয় ডায়রিয়ার মাধ্যমে, অর্থাৎ এটা হল শরীরের শুদ্ধিকরণ তথা বিষ অপসারণ (Detoxification). সাধারণ ডায়রিয়ার কারণ: * অনেক সময় ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া বা পরজীবী জাতীয় জীবাণু আমাদের পেটে প্রবেশ করে বিশেষত আমাদের গৃহীত পানীয় ও খাদ্যবস্তুর মাধ্যমে। তখন ডায়রিয়ার উপসর্গ দেখা দিতে পারে। * আবার পানীয় জল ও খাদ্যের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে পারে টক্সিন, পেস্টিসাইড (কীটনাশক বিষ), অন্যান্য ক্ষতিকারক কেমিক্যাল পদার্থ। উপরে উল্লেখিত দুটি ক্ষেত্রেই শরীরের ইমিউন সিস্টেম সতর্ক হয়ে ওঠে। পাকস্থলী লিভার ও অন্ত্রের সক্রিয়তা বৃদ্ধি পায়, এরা পেট থেকে জীবাণু বা টক্সিন পদার্থ বহিষ্কার করতে তৎপর হয়ে ওঠে। অতঃপর সৃষ্টি হয় ডায়রিয়া বা বারবার পাতলা মল নিঃসরণ। এভাবে মল ও তরলের সঙ্গে আটকে গিয়ে জীবাণু বা টক্সিন বাইরে বেরিয়ে যায়। সাধারণত দু একদিন ধরে চলা এই প্রক্রিয়ায় পুনরায় শরীরের শুদ্ধিকরণ হয়। তাহলে এটাই বোঝা গেল...

লিভারের সমস্যায় পেঁপেপাতা উপকারী:

লিভার কেবল একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ নয়, বরং মানবদেহের এক অনন্য অস্তিত্বের স্বরূপ। যে কিনা আপনার ক্লান্তিকর মুহূর্তে শক্তির সঞ্চার করে, অসুখের দিনে বয়ে আনে তিলে তিলে আরোগ্য। যে কিনা বিষ হরণ করে, রোগজীবাণুকে বিনাশ করে। কিন্তু আমরা অজ্ঞতার কারণে বা অজ্ঞাতসারে লিভারের ওপর নানা রকম অত্যাচার করে বসি, যেমন- ধূম্রপান, মদ্যপান, জাঙ্কফুড ও গুরুপাক খাদ্য গ্রহণ, রাত্রি-জাগরণ। এবং লিভারের পক্ষে সবথেকে ক্ষতিকারক বস্তু হল কেমিক্যাল যুক্ত মেডিসিন। অতএব লিভারকে সুস্থ ও শক্তিশালী করে তোলা জরুরী। এমতাবস্থায় লিভারের জন্য এক শ্রেষ্ঠ ভেষজ ঔষধ হলো পেঁপেপাতা। এর আশ্চর্য গুণের কথা বর্ণনা করা হয়েছে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে, যা কিনা হাজার বছর ধরে স্বীকৃত ও প্রতিষ্ঠিত। এর উপকারিতার প্রমাণ পেয়ে মানুষ পরম্পরায় ব্যবহার করে আসছে এবং এটি একটি ঐতিহ্যবাহী ঔষধি। কিন্তু আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার কারণে এবং ফার্মালবির প্রভাবে প্রাচীন সহজলভ্য চিকিৎসা ক্রমশ সংকুচিত হয়ে আসছে, হারিয়ে যাচ্ছে। লিভারের পক্ষে পেঁপের পাতা বিভিন্ন দিক থেকে কার্যকরী। এর প্রধান কারণ হল এতে থাকা বিভিন্ন বায়োঅ্যাকটিভ যৌগ, যেমন এনজাইম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্...

কাশি নিরাময়ে তুলসী পাতার উপকারিতা:

সাধারণ কাশি হলো শরীরের একটি প্রতিরক্ষা মূলক প্রতিবর্তী ক্রিয়া (Protective reflex). যখন ফুসফুসে বা শ্বাসনালীতে অনুপ্রবেশ করে ধুলো ধোঁয়া জীবাণু বা অন্যান্য অস্বস্তিকারক কণিকা, তখন কাশির মাধ্যমে এই অবাঞ্ছিত উপাদান গুলো শ্বাসযন্ত্র থেকে বাইরে বেরিয়ে যায়। অর্থাৎ এটি শরীরকে বিপদ মুক্ত করা ও সুরক্ষিত রাখার কৌশল। অতএব আমাদের বোঝা উচিত যে, কাশি কোন রোগ নয়, বরং পক্ষান্তরে রোগজীবাণুর বিরুদ্ধে শরীরের আত্মরক্ষা। তাই কাশি হলে অযথা ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই বা অবহেলা করাও উচিত নয়, বরং খুব সচেতনভাবে কাশির উপসর্গটি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে তথা নিরাময় করতে হবে। কখন কাশির বহিঃপ্রকাশ হয়? কাশির উপসর্গটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যা স্বল্পস্থায়ী বা দীর্ঘস্থায়ী উভয়ই হতে পারে। যেমন- * ভাইরাসের সংক্রমণ (Viral infection): সর্দি, ফ্লু (influenza), ব্রঙ্কাইটিস ইত্যাদি ভাইরাল সংক্রমণের কারণে কাশি ও জ্বর হতে পারে। এই সময় শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অংশ হিসেবে আঠালো শ্লেষ্মা তৈরি হয়, যার সাথে আটকা পড়ে জীবাণুগুলি। অতঃপর কাশির মাধ্যমে বাইরে বহিষ্কৃত হয়। অনেক ক্ষেত্রে কফ বা শ্লৈষ্মাা ছাড়াও শুকনো কাশির মাধ্যম...

সাধারণ কাশি প্রসঙ্গে একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা:

কাশি কোনো রোগ নয়, এতে মানুষের প্রাণহানির প্রশ্নই নেই। এটি খুবই সাধারণ একটি উপসর্গ, যা কিনা যেকোনো মানুষের ক্ষেত্রে বছরে একবার দুবার হতে পারে। বিশেষ করে শিশুদের কাশি অধিক লক্ষ্য করা যায়। আসুন তাহলে আজ কাশি প্রসঙ্গে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নেওয়া যাক: কাশি কেন হয়? আমাদের শ্বসনতন্ত্রে যদি জীবাণু ধুলো ধোঁয়া বা অন্যান্য ক্ষতিকারক কণাগুলো প্রবেশ করে তখন সুচতুর শরীর এই অবাঞ্ছিত পদার্থ সমূহকে বাইরে বের করে দেওয়ার প্রয়াস করে। এই প্রয়াসের অন্য নাম হলো কাশি, এটি আসলে শরীরের প্রতিরক্ষামূলক রণকৌশল। সুতরাং শারীরিক বিজ্ঞান বা দেহতত্ত্ব অনুসারে- কাশি কখনো কৃত্রিমভাবে থামিয়ে দেওয়া উচিত নয়। কারণ এর মাধ্যমে শ্বসনন্তন্ত্র থেকে জীবাণু বা টক্সিন পদার্থ বাইরে নিক্ষিপ্ত হয়। অর্থাৎ কাশি হল শরীরকে সুরক্ষিত রাখার বিশেষ কার্যক্রম। কিন্তু কাশির এই কার্যপ্রক্রিয়া ঠিক কিভাবে সংঘটিত হয়? নিচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো- কাশির প্রক্রিয়া প্রধানত তিনটি পর্যায়ে সম্পন্ন হয়: ১. প্রথমে আমাদের শ্বসনন্তন্ত্র স্বতন্ত্রভাবে একটি গভীর শ্বাস গ্রহণ করে (inhalation), এবং গৃহীত বাতাস দ্বারা ফুসফুস পরিপূর্ণ হয়। ...

ঠান্ডা লাগা, সর্দি হাঁচি। উপকারী তুলসীপাতা ও আদা:

ঠান্ডা লাগা, সর্দি হাঁচি- কারণ ও নিবারণ: সর্দি হাঁচি সৃষ্টি হয় কিভাবে? নাকের অভ্যন্তরে, গলায় ও ফুসফুসে যদি ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া ধূলিকণা পরাগরেণু ইত্যাদি প্রবেশ করে, যা কিনা আমাদের পক্ষে অস্বস্তিকর বা ক্ষতিকারক। তাই এই অবাঞ্ছিত উপাদান গুলোকে বহিষ্কারের এক বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে শরীর। এর প্রধান উপসর্গ হলো সর্দি ও হাঁচি। আসল ঘটনাটি হল যে, তখন ইমিউন সিস্টেম সক্রিয় হয়ে ওঠে, এবং নাকের অভ্যন্তরে বা শ্বাসযন্ত্রে উৎপন্ন হয় সর্দি বা শ্লৈষ্মা জাতীয় আঠালো তরল‌‌, যার সঙ্গে আটকে পড়ে প্রবিষ্ট জীবাণু ও টক্সিন পদার্থ, তারপর সর্দি হাঁচির সহিত বাইরে নিক্ষিপ্ত হয়, অর্থাৎ রোগজীবাণু বা টক্সিনের হাত থেকে শরীর সুরক্ষিত থাকে। কখন সর্দি হাঁচির উপসর্গ দেখা যায়? * সংক্রমণ- Infection: সাধারণ সর্দি- Common cold বা ফ্লু Flu. এটি সাধারণত একপ্রকার ভাইরাল ইনফেকশন। যার মধ্যে রাইনোভাইরাস (Rhinovirus) সবচেয়ে প্রচলিত। তখন ভাইরাসগুলিকে বহিষ্কার করতে সর্দি হাঁচির মতো উপসর্গ দেখা যায়। * অ্যালার্জি- Allergy: অনেক মানুষের ক্ষেত্রে সর্দি ও হাঁচির প্রধান কারণ হলো অ্যালার্জি। বিভিন্ন অ্যালার্জেন (যেমন - ফুলের পরাগ,...

জ্বর নিরাময়ের সহজ উপায় গরম জল ও আদা:

জ্বর নিয়ে মানুষ বরাবর ভুগতে থাকে, বিশেষত শিশুদের পীড়া আরো বেশি হয়। জ্বরের সঙ্গে আরও কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে, যেমন শরীরে ব্যথা, দুর্বলতা, ক্ষুধামন্দা ইত্যাদি। কিছু ক্ষেত্রে সর্দি কাশিও হতে পারে। এই জ্বর প্রতি বছর অনেক মানুষের ক্ষেত্রে একবার হতে পারে বা একাধিকবারও হতে পারে। সাধারণত ছোট শিশুরা একাধিকবার এই জ্বরের সমস্যায় পড়ে যায়। এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা জেনে রাখুন- জ্বর কোনো রোগ নয়, বরং রোগজীবাণুর বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরক্ষা মূলক প্রতিক্রিয়া। বিশেষ কোনো ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু আমাদের শরীরে প্রবেশ করলে জ্বর উপসর্গটি দেখা যায়, অর্থাৎ ওই জীবাণুগুলোকে নষ্ট করতে শরীর স্বতন্ত্রভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে ২°-৪° ফারেনহাইট। এই অতিরিক্ত তাপ সহ্য করতে না পেরে জীবাণুরা মারা পড়ে। তাহলে এটাই বোঝা গেল যে- জ্বর কোনো রোগ নয়, বরং আরোগ্যকারী অভিব্যক্তি। তাই চিকিৎসা-বিজ্ঞান অনুসারে বা দেহতত্ত্ব অনুসারে কখনোই কৃত্রিমভাবে জ্বরকে থামিয়ে দেওয়া উচিত নয়। তাহলে আমাদের কি করনীয়? জ্বর বা ভাইরাল ইনফেকশন থেকে দ্রুত আরোগ্য লাভের দুটি উপায় আছে। প্রথমটি হল- ২৪ ঘন্টার মধ্যে নিরাময়। এবং দ্বিতীয়টি...

শিক্ষক ও শিক্ষাব্যবস্থা:

শিক্ষক কেবল একটি শব্দ নয়, বরং বিদ্যার অনুপম স্বরূপ। তিনি শুধু নিছক পাঠ দানকারী নন, তাঁর প্রতিটি উচ্চারণ সত্যের উপস্থাপন, বোধ বিতরণ যার অটল সাধনা। তিনি জ্ঞানের বুনিয়াদ, সভ্যতার স্থপতি। বর্তমানে পশ্চিমবাংলায় চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীরা নেমেছেন রাজপথে পুনরায় চাকরির দাবিতে তথা বেতনের দাবিতে। কিন্তু শিক্ষক কারোর চাকর হতে পারেন কি? শিক্ষক কারোর বেতনভুক্ত কর্মচারী হতে পারেন কি? না, কখনোই নয়। কারণ, শিক্ষক জ্ঞানের গরিমা, স্ততঃ উদ্ভাসিত এক চেতনা। তাইতো বিনম্র বিশ্ব অবনত হয়েছে শিক্ষকের চরণতলে। শিক্ষার্থীর কোমল হৃদয়ে শিক্ষকের পদ্মাসন। আজ শিক্ষককের প্রসঙ্গে উঠেছে প্রশ্ন- যোগ্য বা অযোগ্য নাকি দুর্নীতি? অযোগ্য বলেই তাদেরকে চাকরি থেকে বহিঃসৃত করা হয়েছে। তাহলে জবাব কেউ দিতে পারবে কি, যেসব শিক্ষা কর্মীরা বর্তমানে চাকরিতে বহাল আছেন তারা কি অযোগ্য নয়? শিক্ষকের যোগ্যতার মান আদালত নির্ধারণ করতে পারে না, নিয়োগকারিগণ নির্ধারণ করতে পারে না। শিক্ষকের যোগ্যতার মান কোনো দপ্তরের দস্তাবেজ নয়। কারণ শিক্ষক মানে স্বশিক্ষিত তথা সম্যক জ্ঞানের অধিকারী।  পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ, পুরুষোত্তম শ্রীরামও শিক্ষকের সান্নিধ্...

মানুষ ও ভগবান:

মানুষ ও ভগবান: মানুষের আদিম চেতনা থেকে আজও অমীমাংসিত এক প্রশ্ন, কারণ উত্তর বারবার বদলে গেছে যুক্তিতর্কে অথবা দুর্বিচারে। কিন্তু বিশ্বাসী মনে বা অবিশ্বাসে আবার জেগে ওঠে সদুত্তরের স্পৃহা, অন্তর থেকেও অনন্ত বহির্জগতে তার অন্বেষণ- তাই সে সাজিয়েছে আস্থার গভীরে অর্চনা, আবার বিরুদ্ধাচরণও ঢেলেছে বিষ। কখনো সে বুনেছে দর্শনের যুক্তি কিংবা যাচাই করেছিল বিজ্ঞানের পর্যবেক্ষণে, কেউ ডুবে গেছে হৃদয়ের অতলে ভাবের টানে, কেউবা একলা ফেরে উপাসনার উপত্যকায়। আবার যিনি প্রজ্ঞায় স্থিত তিনি তো নীরব- এক অনুপম অস্তিত্ব। তবে ঈশ্বর কি অন্তরালে অনুভব নাকি মহাকাশের ওপারে মহাশক্তি? ঈশ্বর কি প্রতিটি অস্তিত্বের চৈতন্য নাকি অখণ্ড বিখণ্ড সৃষ্টির সৃষ্টিকর্তা? ঈশ্বর যদি পুষ্পের পাপড়ির রচনাকার, তবে কি প্রলয়কালেও মহাকাল দোর্দণ্ডপ্রতাপ? ঈশ্বর কি অন্ধকারের গভীরে নিবিড় কালিমা অথবা অগণিত নক্ষত্রের বুকে অনির্বাণ অগ্নিশিখা? বিজ্ঞানের ভিত্তি হল পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষণ, তারপর সিদ্ধান্ত। কিন্তু হায়, বিজ্ঞানের যান্ত্রিক প্রয়াসে ঈশ্বরকে পর্যবেক্ষণ করা যায়নি, অতএব সিদ্ধান্ত দিতে বিজ্ঞান অক্ষম। বরং একটা বিন্দুতে এসে বিজ্ঞানের সকল জড়ব...

লিভারের বিভিন্ন রোগের জন্যে কিছু উপকারী ভেষজ:

লিভারের রোগ সিরোসিস, হেপাটাইটিস, ক্যান্সার, ফ্যাটি লিভার ও জন্ডিস সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা: লিভার আমাদের শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা বিভিন্ন জৈব-রাসায়নিক প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। লিভারের কার্যকারিতা ব্যাহত হলে নানা ধরনের রোগ দেখা দিতে পারে। লিভারের প্রধান রোগগুলি সম্পর্কে লিখে আলোচনা করা হলো: * হেপাটাইটিস (Hepatitis): লিভারের প্রদাহকে হেপাটাইটিস বলে। এটি ভাইরাস, অ্যালকোহল, ওষুধের প্রভাবে হতে পারে। * সিরোসিস (Cirrhosis): দীর্ঘস্থায়ী লিভার ক্ষতির কারণে লিভারে ক্ষত তৈরি হলে তাকে সিরোসিস বলে। এতে লিভারের কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। অ্যালকোহল, দীর্ঘস্থায়ী হেপাটাইটিস বি বা সি, নন-অ্যালকোহলিক স্টিয়াটোহেপাটাইটিস (NASH) সিরোসিসের প্রধান কারণ। * ফ্যাটি লিভার (Fatty Liver Disease): লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমা হওয়াকে ফ্যাটি লিভার বলে। এটি দুই প্রকারের হতে পারে- অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার (Alcoholic Fatty Liver), যা অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে হয়। নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার (Non-alcoholic Fatty Liver Disease - NAFLD), মদ্যপান ছাড়াই যখন লিভারে চর্বি জমে। * লিভার-ক্যান্সার (Liver...

জ্বর প্রসঙ্গে কিছু কথা:

জ্বর কোনো রোগ নয় বরং রোগজীবাণুকে নষ্ট করার একটি প্রয়াস। জ্বর হলো শরীরের বর্ধিত উষ্ণতা তথা আরোগ্যের অগ্নিস্নান। আমাদের শরীরের অভ্যন্তরে কোনো দুষ্ট ভাইরাস প্রবেশ করলে, তাকেই বলে ভাইরাল ইনফেকশন। এই ভাইরাল ইনফেকশন হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। ভাইরাস ছড়িয়ে আছে পরিবেশে যত্রতত্র সর্বত্র, জলে, স্থলে, বায়ুমণ্ডলে। ভাইরাস ছড়িয়ে থাকতে পারে যে কোন প্রাণীর দেহে, সেই প্রাণীটি হতে পারে কীটপতঙ্গ, পশু, পাখি, মনুষ্য বা মৎস্যাদি। ভাইরাস হলো একটা অণুজীব বা ক্ষুদ্র জীবাণু। জীবজগতে ভাইরাসের মোট সংখ্যা অবশ্যই অসংখ্য। তবুও বিজ্ঞানীদের মতে আনুমানিক সংখ্যাটা হলো ১০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০ (১×১০^৩১)। আসলে আমাদের চারপাশে এত বিপুল ভাইরাস ছড়িয়ে আছে যে, আমরা যেন ভাইরাসের সমুদ্রে ডুবে আছি। ভাইরাসের উপকারিতা- ভাইরাস হল জীবদেহের এক নিত্য সহচর, জীবজগতের পরম বন্ধু। জৈবিক বাস্তুতন্ত্রে এদের গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল ভূমিকা রয়েছে, যা জীবনের অস্তিত্ব ও ভারসাম্য রক্ষায় অপরিহার্য। এক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের নিজস্ব কোষের সংখ্যা প্রায় ৩০ ট্রিলিয়ন, কিন্তু এর সাথে থাকে ৩৯ ট্রিলিয়ন ব্যাকটেরিয়া এবং ৩৮০ ট্রিলিয়ন ভাইরাস (১ ট...

ডায়াবেটিস রোগের বিষয়ে কিছু কথা:

যারা তথাকথিত ডায়াবেটিস রোগী, তারা কি বাস্তবে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত? প্রশ্নটা উঠছে এই কারণে যে, ডায়াবেটিস রোগের উপসর্গ অনুপস্থিত থাকা সত্ত্বেও কেবলমাত্র ব্লাডসুগার টেস্টের ভিত্তিতে তাদেরকে ডায়াবেটিস রোগী বলে ঘোষণা করা হয়। বিশেষত খালি পেটে সকালবেলায় ব্লাড সুগার টেস্ট করা হয়। এমন একটি ধারণা পোষণ করা হয় যে, সকালে খালি পেটে মানুষের রক্তে শর্করার পরিমাণ কম থাকে। এই ধারণা অনুসারে যদি রক্ত পরীক্ষায় দেখা যায় যে, শর্করার মাত্রা অধিক তাহলে সেই ব্যক্তিকে ডায়াবেটিস রোগী বলে প্রতিপন্ন করা হয়। কিন্তু প্রকৃত চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুসারে জানা গেছে যে, খালি পেটে সকালবেলায় ব্লাডসুগার কম থাকে না বরং বেশি থাকে অর্থাৎ গ্লুকোজের স্বাভাবিক ভারসাম্য বজায় থাকে। আসুন, এই বিষয়টা সঠিকভাবে বুঝে নেওয়া যাক: * সারারাত কিছু না খাওয়া বা দীর্ঘসময় খাদ্যের অভাবে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায় ভোরবেলায়। তখন কোষগুলি গ্লুকোজের অভাবে দুর্বল হয়ে যেতে পারে বা এনার্জি উৎপন্ন করতে পারে না। ফলত শরীরের অভ্যন্তরীণ ক্রিয়া কলাপ ব্যাহত হতে পারে এবং ব্যক্তি তার বাহ্যিক কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে দুর্বলতা অনুভব করবে। কিন্তু ...

কিডনির সমস্যা বা ডায়ালিসিস চলছে?

কিডনির সমস্যা বা ডায়ালিসিস চলছে? আসুন আজ এক গভীর সত্য অনুসন্ধান করা যাক। কারণ সত্য আপনাকে সুরক্ষা প্রদান করবে। সচেতনতা আপনাকে বাঁচাতে পারে রোগব্যাধির বিপদ থেকে। তাহলে ধৈর্য সহকারে সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি পড়া যাক। আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা কিডনির সমস্যাকে এমন এক ভয়ঙ্কর রূপে তুলে ধরে, যেন একবার সূত্রপাত হলে তা অনিবার্যভাবে ডায়ালিসিস বা কিডনি-প্রতিস্থাপন, এবং তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঝুঁকে পড়া। কিন্তু এমন তো হওয়ার কথা নয়। কারণ, খুবই সাধারণ উপসর্গ যেমন প্রস্রাব কয হওয়া বা পা ফুলে ওঠা, যা কিনা সঠিক চিকিৎসার দ্বারা খুব সহজে সেরে যাওয়ার কথা। কিন্তু এই সাধারণ উপসর্গ নিয়ে মানুষ যখন চিকিৎসা কর্মীর কাছে পৌঁছে যায়, তখন বলা হয় যে এটি কিডনি-রোগ, খুব খারাপ সমস্যা। তার নানা রকমের প্যাথলজিক্যাল টেস্ট করা হয়, উঠে আসে সোডিয়াম পটাশিয়াম বা ক্রিটিনাইনের আতঙ্ক। অতঃপর শুরু করে দেওয়া হয় চিকিৎসা পর্ব, কিন্তু রোগী আরোগ্য লাভ করতে পারে না, বরং তার সমস্যা আরও বেড়ে যায়। তার কিডনি ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। তারপর শুরু হয় ডায়ালিসিসের পর্ব অর্থাৎ রোগীকে একটি নির্মম যন্ত্রের সঙ্গে বেঁধে ফেলা হয়। বলা হয় য...

ডায়াবেটিস রোগের উপসর্গ কি কি?

বর্তমানে সারা বিশ্বে ডায়াবেটিস এক আতঙ্ক, এক মহামারি। কিন্তু কেন? এই রোগের কি সঠিক চিকিৎসা নেই? কেনইবা আজীবন ধরে মেডিসিন তথা কেমিক্যাল সেবন করতে হয়? কেনইবা কৃত্রিম ইনসুলিন ব্যবহার করতে হয়? ইনসুলিন ব্যবহারকারী শিশুরা গভীরভাবে পীড়িত হয়। রোগী সেরে উঠতে পারে না, বরং তার জটিলতা বেড়ে যায়, মেডিসিনের পরিমাণ ও ইনসুলিনের মাত্রা লাগাতার বাড়ানো হয়। চিকিৎসার খরচ বহন করতে গিয়ে গরিব ও মধ্যবিত্ত পরিবারে নেমে আসে আর্থিক দুর্দশা। তাই হয়তো আজ রোগে নয়, বরং রোগের চিকিৎসা জনিত কারণে পীড়িত মানুষের অন্তরে করুণ জিজ্ঞাসা- কোথাও কি নেই একফোঁটা আরোগ্য? কোথাও কি নেই এক প্রকৃত বৈদ্য? কোথাও কি নেই একটু সঞ্জীবনী ঔষধ? এই জিজ্ঞাসার জবাব আজও দেয়নি চিকিৎসা ব্যবসায়ীরা। অথচ চিকিৎসা-বিজ্ঞান আবিষ্কার করে গেছে আরোগ্যের মূলমন্ত্র- প্রতিটি রোগের কারণ আছে, কারণটি নিবারণ করলেই নিশ্চিত নিরাময় লাভ করা যায়। একেই বলে Holistic healing/medicine. চিকিৎসা বিজ্ঞানের এই অমোঘ সিদ্ধান্ত অনুসারে ডায়াবেটিস, ক্যান্সার বা যেকোনো রোগের নিশ্চিত আরোগ্য আছে। ডায়াবেটিস রোগ আসলে কি? Diabetes এর আসল নাম হল হল মধুমেহ বা বহুমূত্র। মা...

মানুষের কিডনিতে ও পিত্তথলিতে পাথর তৈরি হয় কিভাবে?

ছবি
পিত্তথলির পাথর ও কিডনির পাথর সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো: পিত্তথলিতে পাথর তৈরি হয় কিভাবে? লিভারের নিচে অবস্থিত একটি ছোট্ট থলির মতো অঙ্গ, যার নাম পিত্তথলি। এখানেই জমা হয় লিভার থেকে নিঃসৃত পিত্তরস। তৈলাক্ত খাদ্যবস্তু বা চর্বিযুক্ত খাবার হজম করতে এই পিত্তরস বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কিন্তু আমাদের ত্রুটিপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস এবং অস্বাস্থ্যকর জীবনশৈলের কারণে যখন এই পিত্তরসের উপাদানগুলোর ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়, তখন পিত্তথলিতে পাথর তৈরি হয়। এই পাথরগুলো ছোট বালুকণার আকারে হতে পারে, আবার ১০-১৫ মিলিমিটার আকারের বড় পাথরে পরিণত হতে পারে। পিত্তপাথর তৈরি হওয়ার মূল কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো: * অতিরিক্ত কোলেস্টেরল: পিত্তথলিতে যে পিত্তরস সঞ্চিত হয় তাতে বিশেষ কিছু উপাদান পাওয়া যায়, যেমন কোলেস্টেরল, বিলিরুবিন এবং পিত্ত লবণ (bile salts)। সাধারণত পিত্তরসে যে পর্যাপ্ত পরিমাণে পিত্ত লবণ থাকে তার দ্বারা কোলেস্টেরল দ্রবীভূত হয়। কিন্তু কখনো কখনো এর ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়ে পড়ে, হয়তো পিত্ত লবণের মাত্রা কমে যায় বা কোলেস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এমতাবস্থায় কিছু পরিমাণ কোলেস্টেরল অদ্রবীভূত অবস...